Home Maintenance Tips

ঘরের আনাচ-কানাচের কঠিন দাগগুলো দূর করার ৭ টি উপায়

December 11, 2021 | By

শরীর ও মন ভালো রাখার গুরুত্বপূর্ণ পদ্ধতিগুলোর মধ্যে একটি হলো নিজের বাড়িকে পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন রাখা। আপনি সারাদিন কাজ করে যে স্থানে ফেরত আসবেন, সেই স্থান হওয়া দরকার গোছানো, যাতে করে আপনার দিনের ক্লান্তি দূর করা সম্ভব হয়।

চোখের সামনে থাকা বাড়ির অংশগুলো নিয়মিত পরিষ্কার করা হলেও, প্রায় ক্ষেত্রেই দেখা যায় যে বাড়ির কর্ণারগুলো রয়ে যায় অপরিষ্কার। প্রতিদিনের অবহেলায় এ জায়গাগুলোতে দেখা যায় কঠিন দাগ, যার জন্য পোহাতে হয় দূর্ভোগ। তাই দেরী না করে আপনার ঘরের আনাচে কানাচে থাকা দাগ ও ময়লাগুলো পরিষ্কার করতে লেগে পড়ুন, আর কাজে লাগান আমাদের এই ৭টি টিপস। 

১। স্লাইডিং জানালার ট্র্যাক

আপনার বাড়ির সবচেয়ে অবহেলিত স্থানের তালিকা করতে গেলে সবার আগে যে জায়গার কথা মাথায় আসবে তা হলো আপনার জানালা। বাহিরে থেকে আপনার জানালা দিয়েই বেশিরভাগ ধুলো-বালি এসে থাকে, তবুও বাড়ির অন্যান্য স্থানগুলো পরিষ্কার করলেও, জানালা পরিষ্কারের কথা আমাদের মাথায় আসে না। জানালায় জমতে থাকা এসব জেদি ময়লাগুলো দূর করতে আপনি ব্যবহার করতে পারেন সাবান এবং বেকিং সোডা। যদিও বেকিং সোডা নিজেই ময়লাগুলো দূর করতে সক্ষম, তবুও আপনি এর সাথে ব্যবহার করতে পারেন ভিনেগার। প্রথমে বেকিং সোডাকে ময়লাগুলোর উপর তিন/চার মিনিট রাখুন। এরপর এতে কিছু ভিনেগার ঢালুন এবং একটি স্পঞ্জ দিয়ে মুছুন। পরবর্তীতে শুকনা কাপড় দিয়ে মুছলেই আপনি চমক দেখতে পারবেন। ব্যস! আপনার জানালায় থাকা কঠিন দাগ নিমিষেই হয়ে যাবে পরিষ্কার!  

Image: twotwentyone.net

২। সিলিং ফ্যানের ব্লেড

ঢাকার দূষিত পরিবেশের কথা সবার-ই জানা। এই বাড়তি দূষণের কারণে আপনার বাড়ির সিলিং ফ্যানগুলোর নোংরা হওয়া ঠেকানো অসম্ভব। এবার আপনার পরিষ্কার মিশনের পরবর্তী ধাপ হবে সিলিং ফ্যান পরিষ্কার করা। তাই একটি মই, ভেজা ন্যাকড়া, আর ময়লা ফেলার ব্যাগ নিয়ে নেমে পড়ুন কাজে। প্রথমেই শুরু করুন ফ্যানের ব্লেডস অথবা পাখনাগুলো দিয়ে। ভেজা ন্যাকড়াটি দিয়ে আপনার ফ্যানের পাখনাগুলো পরিষ্কার করুন, আর ময়লা গুলো নিচে অথবা আপনার রুমের অন্যান্য ফার্নিচারে ছড়িয়ে পড়া এড়াতে পাখনাগুলোর মাথায় ময়লা ফেলার ব্যাগটি লাগিয়ে রাখুন।

Image: nocolliny-design.com

৩। বেসিন এবং বাথরুমের ড্রেইন

আপনার বাসার ড্রেনেজ সিস্টেমগুলো যেন আটকে না যায়, সেজন্য আপনার বেসিং এবং অন্যান্য ড্রেইনগুলো পরিষ্কার করা খুব গুরুত্বপূর্ণ। ড্রেইনে থাকা ময়লা পরিষ্কার করার সবচেয়ে ভাল পদ্ধতি হলো জিপ-টাই পদ্ধতি। এতে করে আটকে থাকা ময়লা পরিষ্কার হবে, সাথে পরিষ্কার হবে আটকে থাকা বিরক্তিকর চুল-ও। এছাড়াও আপনি বেকিং সোডা ও ভিনেগারের মিশ্রণ বানিয়ে এর মধ্যে ঢালতে পারেন, তবে এতে করে আপনার ড্রেইনেজ পাইপগুলোর ক্ষতি হতে পারে। তাই গ্যালনভর্তি এ্যামোনিয়া অথবা ব্লিচ আপনার বাড়ির ড্রেইনে ঢালার আগে এই বিষয়টি বিবেচনা করুন।

Image: faucetshop.com
Image: signaturehardware.com

৪। আয়না

আমরা প্রতিদিনের কাজেই আয়না ব্যবহার করি। আয়নার কিনারাগুলোতে  যেমন প্রতিদিন জমে হাজারো ময়লা, সেগুলো পরিষ্কার করাও হয় ঠিক তেমনই কষ্টকর। আমাদের পরামর্শ থাকবে, এই কিনারাগুলোতে পৌঁছাতে ব্যবহার করুন সূক্ষ্ম ব্লেডের মতন চোখা কিছু। রেজর ব্লেড এবং লিকুইড ডিশ সোপ ব্যবহার করে এই ময়লাগুলো পরিষ্কার করা সম্ভব, কোনো প্রকার পানির দাগ না ফেলেই। আপনার আয়নার কিনারাগুলো তাই প্রতিনিয়ত রেজর ব্লেডের সাহায্যে চেঁছে পরিষ্কার করুন।  এরপর একটি শুকনো কাপড়ের সাহায্যে মুছে ফেলুন লেগে থাকা সাবান। তাছাড়া ভিনেগারও এক্ষেত্রে ভালো ফলাফল দেয়। আপনার আলমারি ও ড্রেসিং টেবিলের আয়নার জেদি দাগ পরিষ্কারে তাই ব্যবহার করতে পারেন ভিনেগার।

Image: roseandgrey.co.uk

৫। ল্যাম্পশেডস

আপনার বাড়ির ল্যাম্পশেডসগুলো যেমন নান্দনিকতার প্রতীক, ঠিক তেমনই ময়লা ও ধূলো-বালি জমা হওয়ার জন্য সুযোগ্য স্থানও বটে। মাথায় রাখবেন, বিভিন্ন ধরনের ল্যাম্পশেডস এর জন্য দরকার বিভিন্ন ধরনের পরিষ্কার প্রক্রিয়া। যে ল্যাম্পশেডসগুলো ভঙ্গুর, সহজেই ভেঙে যাওয়ার সুযোগ রয়েছে, সেগুলো পরিষ্কার করতে ব্যবহার করুন ফেদার ব্রাশ। এছাড়া বাকিগুলোর ক্ষেত্রে ব্যবহার করতে পারেন ভ্যাকিউম ক্লিনার, অথবা পরিষ্কার করতে পারেন আলাদাভাবেও। 

সব ল্যাম্পশেড ধোঁয়া সম্ভব নয়। যেই ল্যাম্পশেডগুলো মসৃণ এবং সমতলের, সেগুলো পরিষ্কারে লিন্ট রোলার সবচেয়ে কার্যকরী। এতে করে ধুলো ও আলগা চুলগুলো পরিষ্কার হয়ে যায়। যেসব ল্যাম্পশেডগুলো একটু বিশেষ নকশাযুক্ত, সেগুলো নরম সুইতির কাপড় দিয়ে আলাদাভাবে পরিষ্কার করাই শ্রেয়।

Image: niccomyanmar.com

৬। কিচেন ক্যাবিনেটের দরজা

কেন আপনি কিচেন ক্যাবিনেটের দরজাগুলো পরিষ্কার রাখবেন, তা নিশ্চয়ই নতুন করে বলার প্রয়োজন নেই। রান্নাঘরের ক্যাবিনেটগুলো এমনিতেই তেল চিটচিটে হয়ে থাকে। এই ময়লা পরিষ্কারে পানি, লেবুর রস এবং বেকিং সোডার মিশ্রণ ব্যবহার করুন। দরজাগুলোয় এই মিশ্রণ লাগিয়ে রেখে দুই/তিন মিনিটের জন্য রেখে দিন। এরপর পর্যায়ক্রমে স্পঞ্জ এবং শুকনো কাপড় দিয়ে পরিষ্কার করে ফেলুন। যতক্ষণ না আপনার মন মতো ফল পাচ্ছেন, ততোক্ষণ একই প্রক্রিয়া অবলম্বন করুন।

Image: Sheraspace

৭। ফ্রীজের নিচের অংশ

যেকোন খাবারের গুড়া থেকে শুরু করে চুল এবং তেল, কোনো কিছুরই জমা হওয়া বাদ থাকে না ফ্রীজের তলানীতে। ঝাঁড়ু ব্যবহার করেই এখানকার বেশিরভাগ ময়লা দূর করা সম্ভব, তবে এমন কিছু ময়লা থাকতেই পারে যা ঝাড়ু দিয়ে পরিষ্কার সম্ভব নয়। এজন্য ব্যবহার করুন জিপ-টাই প্রক্রিয়া। আপনার ভাগ্য ভালো হলে এই প্রক্রিয়ায় পেয়ে যেতে পারেন হারিয়ে যাওয়া কোনো আংটি অথবা মূল্যবান কিছুও।

Image: bhg.com

শুরুতেই বলা হয়েছে, সুস্থ সুন্দর জীবন যাপনে পরিষ্কার পরিচ্ছনতার কোন বিকল্প নেই। একটা পরিষ্কার পরিবেশ শুধুমাত্র আমাদের জীবনযাত্রার মানকেই নির্দেশ করে না, বরং আমাদের মন-মেজাজ ভালো রাখতেও সাহায্য করে। আমরা যেভাবে আমাদের শরীরের যত্ন নেই, সেই যত্ন আমাদের বাড়িরও প্রাপ্য। 

আপনার ইন্টেরিওর সাজাতে যদি প্রফেশনাল সাহায্য খুঁজে থাকেন, তবে যোগাযোগ করুন Sheraspace– এর সাথে।

এই ব্লগ টি English এ পড়ুন । 

অনুবাদ: নার্গিস হামিদ মনামী

You Might Also Like

No Comments

Leave a Reply